Discuss Forum

1. ণ-ত্ব বিধি অনুসারে নিচের কোনটি অশুদ্ধ ?

  • A. রুপায়ণ
  • B. রুপায়ণ
  • C. রুপায়ণ
  • D. রুপায়ণ

Answer: Option B

Explanation:

ব্যখ্যাঃ ণ - ত্ব বিধানের প্রধান নিয়মগুলো এখানে দেয়া হল :
১. ঋ (ঋ - কার), র (র - ফলা, রেফ), ষ - এর পর মূর্ধণ্য ণ হয়। যেমন :

ঋণ ক্ষরণ আকীর্ণ কৃষাণ

ঋণী উচ্চারণ জীর্ণ কর্ষণ

ঘৃণা দারুণ পূর্ণিমা ভূষণ

তৃণ চারণ শীর্ণ বিকর্ষণ

‘ক’ ও ‘ষ’ যুক্ত হয়ে যুক্তব্যঞ্জন ক্ষ হয়। এই যুক্তব্যঞ্জনে মূর্ধন্য ষ আছে বলে ক্ষ - এর পরে ন - ধ্বনি থাকলে তা মূর্ধন্য ণ হয়। যেমন : ক্ষণ, দক্ষিণ, ক্ষুণ্ণ, দূরবীক্ষণ, প্রশিক্ষণ, রক্ষণ।

২. ট - বর্গ (ট ঠ ড ঢ) - এর পূর্বে যুক্ত দন্ত্য - ন মূর্ধন্য - ণ হয়। যেমন :

কণ্টক অকুণ্ঠিত মন্ডলি বণ্টিত

ঘণ্টা উৎকণ্ঠা প্রচন্ড কণ্ঠাস্থি

নিষ্কণ্টক ভুলুণ্ঠিত গন্ড অকালকুষ্মান্ড

৩. ঋ (ঋ - কার), র (র - ফলা, রেফ), ষ - এর পর যদি স্বরবর্ণ, ক - বর্গ (ক খ গ ঘ ঙ), প - বর্গ (প ফ ব ভ ম) এবং য য় হ ং - এই সব অনুকূল বর্ণের এক বা একাধিক বর্ণ থাকে, তবে তার পরে দন্ত্য - ন থাকলে তা মূর্ধন্য - ণ হয়। যেমন:

কৃপণ প্রবণ প্রাঙ্গণ নিরূপণ

দর্পণ চর্বণ সর্বাঙ্গীণ দ্রবণ

সমর্পণ শ্রাবণ গ্রহণ ক্ষেপণ

নির্মাণ রোপণ শ্রাবণ ব্রাহ্মণ

উপরের নিয়ম অনুযায়ী আয়ন শব্দটি থাকলে আয়ন শব্দের দন্ত্য - ন পরিবর্তিত হয়ে মূর্ধন্য - ণ হয়। যেমন:

উত্তরায়ণ চন্দ্রায়ণ

পরায়ণ রবীন্দ্রায়ণ

সংস্কৃত ব্যাকরণের নিয়মে কিছু সাধিত শব্দে এসব বিধান কার্যকর হয় না। ফলে ঐ ধরনের তৎসম শব্দে দন্ত্য - ন বহাল থাকে। যেমন:

অগ্রনায়ক ছাত্রীনিবাস নির্নিমেষ

হরিনাম ত্রিনেত্র বহির্গমন

প্রনষ্ট পরান্ন দুর্নীতি

৪. প্র, পরি, পরা, নির্ - এ চারটি উপসর্গের পর দন্ত্য - ন মূর্ধণ্য - ণ হয়। যেমন:

পরিণত পরিবহণ প্রণত প্রণিপাত

পরিণতি নির্ণয় প্রণয় প্রণীত

প্রবীণ নির্ণীত প্রবণ প্রণিধান

ব্যতিক্রম : পরিনির্বাণ, নির্নিমেষ, প্রঘণ্ট। পরিবহন বানানও শুদ্ধ। অপর, পরা, পূর্ব, প্র - এই কটি পূর্বপদের পর অহ্ন শব্দ ণত্ব বিধান অনুসারে দন্ত্য ন - এর জায়গায় মূর্ধণ্য ণ হয়। যেমন : প্র + অহ্ন + প্রাহ্ণ, অপর + অহ্ন = অপরাহ্ণ, পরা + অহ্ন = পরাহ্ণ, পূর্ব + অহ্ন = পূর্বাহ্ণ।

৫. সংস্কৃত ভাষায় দীর্ঘকাল থেকে কিছু শব্দে মূর্ধন্য - ণ চলে আসছে। এ সব তৎসম শব্দে নিত্য মূর্ধন্য - ণ হয়। যেমন:

অণু গণনা তৃণ আণবিক

গণিত বাণ কণা গৌণ

গণক জীবাণু স্থাণু বেণু

৬. বাংলা ভাষায় মূল সংস্কৃত (তৎসম) শব্দের মত সংস্কৃত শব্দের পরিবর্তিত রূপেরও ব্যবহার প্রচলিত আছে। এ ধরনের শব্দকে তদ্ভব বা প্রাকৃতজ শব্দ বলা হয়। এ ধরনের শব্দের মূল সংস্কৃত বানানের মূর্ধন্য - ণ এর জায়গায় দন্ত্য ন হবে। যেমন :

তৎসম তদ্ভব তৎসম তদ্ভব

এক্ষণ এখন কর্ণ কান

কোণ কোনো গৃহিণী গিন্নি

প্রণাম পেন্নাম ঘৃণা ঘেন্না

৭. বিদেশি শব্দে মূর্ধন্য - ণ ব্যবহৃত হয় না। যেমন : ইরান, তুরান, জার্মান, কোরান। বিদেশি শব্দে ট - বর্গের নিয়মও অকার্যকর। যেমন :

অ্যাকসিডেন্ট কন্ট্রোল

এজেন্ট ক্যান্টিন

পেশেন্ট সিমেন্ট

৮. ত বর্গ (ত থ দ ধ ন) - এর পূর্বে যুক্ত দন্ত্য - ন মূর্ধন্য - ণ হয় না। যেমন: গ্রন্থ, বৃন্দ, বৃন্ত।

৯. সম্মানসূচক ক্রিয়াপদের শেষে মূর্ধন্য - ণ হয় না। যেমন : করেন, ধরেন, করুন, ভরুন।

 

 


Post your comments here:

Name:
Mobile:
Email:(Optional)

» Your comments will be displayed only after manual approval.